গুজরাটের পুর বন্দরে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে গান্ধীজীর জন্ম, 1869 সালের 2 রা অক্টোবর । বাবার নাম করমচাঁদ গান্ধী । ছেলেবেলায় তার নাম ছিল মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী । গান্ধী ছেলেবেলায় বাবা-মায়ের সাথে পোরবন্দরে ছিলেন । সেখানকার স্থানীয় পাঠশালায় তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হলেও যখন তার বয়স সাত বছর বাবারাজ কোর্টের বিচারপতি হয়ে গেলেন ফলে রাজকোট পাঠশালায় ভর্তি হতে হয় এবং পরে হাই স্কুলে ভর্তি হলেন । মাত্র 13 বছর বয়সে গান্ধীজীর বিবাহ হয়ে যায় । গান্ধীর কাছে সেই সময়ে স্ত্রী কন্তুরি বাই ছিলেন খেলার সাথী । কন্তুরিবাই ছিলেন সম্পূর্ণ নিরক্ষর । গান্ধীজির আন্তরিক চেষ্টায় সামান্য পড়াশোনা শিখেছিলেন । বিবাহের তিন বছরের মধ্যেই গান্ধীজীর পিতা মারা গেলেন । 1880 সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে, স্থানীয় কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়ার ইচ্ছা প্রবল হয়ে ওঠে । গান্ধীর পরিবারের সকলেই ছিলেন নিরামিষভোজী এবং রক্ষণশীল মনোভাবের । ছেলের বিলেতে গিয়ে বংশের নিয়ম-কানুন সম্পূর্ণভাবে ভুলে যাবে এই আশঙ্কায় কেউই তাকে প্রথমে যাবার অনুমতি দিতে চায় না । শেষ পর্যন্ত গান্ধীর বড় ভাই তাকে বিলাতে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়ার অনুমতি দিলেন । 1888 সালে তিনি ইংল্যান্ডের পথে রওনা হলেন । অল্পদিনের মধ্যেই তিনি নিজের অভ্যস্থ জীবন শুরু করলেন ।
1891 সালে গান্ধী ব্যারিস্টারি পাস করে ভারতে ফিরে এলেন । কয়েক মাস পরিবারের সকলের সাথে রাজকোটে থাকার পর বোম্বাই গেলেন । উদ্দেশ্য ব্যারিস্টারি করার । কিন্তু চার মাসের মধ্যে অর্থ উপার্জনে তেমন কোন সুবিধা করতে পারলেন না । এই সময় দক্ষিণ আফ্রিকার আব্দুল্লাহ কোম্পানির একটি মামলা পরিচালনা করার ব্যাপারে গান্ধীর ভাইয়ের কাছে সংবাদ পাঠালেন, তবে তার সমস্ত খরচ ছাড়াও মাসে 105 পাউন্ড করে দেবেন বলে কথা হয়েছিল । গান্ধী প্রস্তাব মেনে নিলেন এবং 1893 সালে এপ্রিল মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার পথে রওনা হলেন । এই সময় দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার একটি ঘোষণায় ভারতীয়দের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার হুকুম জারি করে । এই অবিচারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি । স্থির করলেন এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করবেন । গান্ধীর আন্দোলন সাধারণ ভারতীয়দের মধ্যে অভূতপূর্ব উদ্দীপনা সৃষ্টি করল এবং প্রায় 10 হাজার ভারতীয়দের সাক্ষ্য দেওয়া দরখাস্ত উপনিবেশ মন্ত্রী লর্ড রিপনের কাছে পাঠানো হলো । মূলত তারই চেষ্টায় 1894 সালে 22শে may গঠণ হলো ভারতীয় কংগ্রেস । গান্ধী হলেন তার প্রথম সম্পাদক ।
এরপর তিনি কয়েক মাসের জন্য ভারতবর্ষে ফিরে এসে নিজের পরিবারের লোকজনকে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় রওনা হলেন । দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রান্সভাল ও এরেনজিয়া প্রদেশের বুয়র সম্প্রদায় প্রভৃত্ব ছিল । এই বুয়র দের সাথে সোনার খনির কর্তৃত্ব নিয়ে 1899 সালে ইংরেজদের যুদ্ধ হলো ।গান্ধী তাদের সমর্থন না করে রাজত্ব প্রজা হিসেবে ইংরেজদের সেবা করার জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী তৈরি করলেন । এই বাহিনী আহত সৈন্যদের সেবা করে যথেষ্ট প্রশংসা অর্জন করেছিল । এই যুদ্ধের পরবর্তী কাল থেকে গান্ধীর জীবনে পরিবর্তন দেখা দিল । তিনি সরল সাদাসিধে জীবন যাপন করতে আরম্ভ করলেন ।
1906 সালে ট্রান্সভালে এক অর্ডিন্যান্স জারি করে 8 বছরের উপর সব ভারতীয় নারী পুরুষকে নাম রেজিস্ট্রি করার আদেশ দেওয়া হয় এবং সকলকে দশ আঙুলের ছাপ দিতে হবে বলে নতুন আইনে ঘোষণা করা হয় । এতে গান্ধীর তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ করলেন এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিকার করার জন্য ভারতীয়দের প্রথম সত্যাগ্রহ আন্দোলন আরম্ভ করলেন । গান্ধী আরো বহু ভারতীয়দের সাথে বন্দী হলেন । তার দু মাস কারাদণ্ড হলো । এই প্রথম কারাবরণ করলেন গান্ধী । 15 দিন পর সরকার কিছুটা নরম হলে গান্ধীর সাথে চুক্তি হলো যে ভারতীয়রা যদি স্বেচ্ছায় রেজিস্ট্রি করে তবে এই আইন তুলে নেওয়া হবে । অনেক সম্প্রদায় এই আইন মেনে নিলেও পাঠান রা তা মেনে নিলো না । তাদের ধারণা হলো গান্ধীজী বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন ।
গান্ধীর আন্তরিক চেষ্টা সত্ত্বেও ইংরেজরা তার কোনো দাবি মেনে নেয় নি । সত্যাগ্রহ আন্দোলন ক্রমশ বেড়ে চলে । গান্ধীর দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দোলন অন্যদের হাতে তুলে দিয়ে প্রথমে ইংল্যান্ডে যান কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় ভারতে ফিরে এলেন । 1915 সালে আমেদাবাদের কাছে কোচরার নামে এক জায়গায় সত্যাগ্রহ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করলেন । সে সময় ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণ শ্রমিক আফ্রিকায় পাঠানো হতো । এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠেন গান্ধী । কিছুদিনের মধ্যেই এই আন্দোলন প্রবল আকার ধারণ করল । এর ফলশ্রুতিতে 1917 সালে 31 শে জুলাই ভারত থেকে শ্রমিক পাঠানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো ।
1918 সালে ইউরোপের বুকে চলছে বিশ্ব যুদ্ধ । ইংরেজরাও এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন । বড়লাট লর্ড চেমসফোর্ড গান্ধী কে দিল্লিতে ডেকে পাঠালেন । তিনি এই যুদ্ধে ভারতীয় দের পক্ষ থেকে সমর্থনের জন্য অনুরোধ করলেন । গান্ধীর ধারণা হয়েছিল ভারতবর্ষে ইংরেজদের সাহায্য করলে কিছু কাজের হবে কিন্তু অচিরেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছিল । ইংরেজের প্রতি তার ছিল এক মোহ যা থেকে তিনি কোনওদিনই মুক্তি হতে পারেননি । যুদ্ধের পর সকলে আশা করেছিল ভারতবাসী স্বায়ত্তশাসন পাবে কিন্তু তার পরিবর্তে বড়লাট রাওলাট আইন নামে এক দমনমূলক আইন পাশ করলেন । এতে বলা হলো কেউ সামান্য সরকারি-বিরোধী কাজকর্ম করলে তাকে বিনা বিচারে বন্দি করা হবে ।
13 এপ্রিল রামনবমীর মেলা উপলক্ষে জালিয়ানওয়ালাবাগ নামে এক জায়গায় কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হলো । জাইগাটার চারিদিকে উঁচু প্রাচীর বের হবার একমাত্র পথ ছিলো তার গেট । ডায়ারের নির্দেশ এই নিরীহ জনগণের ওপর নির্মম ভাবে গুলি চালানো হলে কয়েক হাজার মানুষ মারা যায় । এই হতাহতের ঘটনায় সমস্ত দেশ ক্ষোভে ফেটে পড়লো । বহু জায়গায় হিংসাত্মক আন্দোলন শুরু হল । গান্ধীর সত্যাগ্রহ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হলেও তিনি নিজের ভুল স্বীকার করলেন ।
নাগপুরে কংগ্রেসের অধিবেশনে 1923 সালে গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনের প্রস্তাব সমর্থিত করা হলো । গান্ধী ইংরেজ সরকারের সাথে সহযোগিতা করতে নিষেধ করলেন । তিনি বললেন সরকারি স্কুল-কলেজ, আইন-আদালতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে । ব্যবস্থাপক সভা বর্জন করতে হবে । বিদেশি দ্রব্য বর্জন করতে হবে । স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য চরকা ও তাঁত প্রচলন করতে হবে । গান্ধীর ডাকে সাড়া পাওয়া গেল । দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদেশি কাপড় পড়ানো শুরু হলো । মানুষ নিজের হাতে বানানো কাপড় পরা শুরু করলো । 1922 সালে 8 ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশের চৌরিচৌরাই উত্তেজিত জনতা কিছু পুলিশকে হত্যা করল । এর প্রতিবাদে তিনি আন্দোলন বন্ধ করে দিলেন । গান্ধীকে গ্রেফতার করা হল । দেশব্যাপী আন্দোলনের দায় গান্ধী নিজেই স্বীকার করে নিলেন । বিচারে তাকে 46 বছর কারাদণ্ড দেওয়া হলো । জেলে তিনি চরকা কাটতে চাইলেন কিন্তু তাকে সে অনুমতি দেওয়া হল না । তিনি উপবাস শুরু করলেন । শেষ পর্যন্ত তার সব দাবি মেনে নেওয়া হল । কিন্তু কিছুদিন পূর্বে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন । এই অসুস্থতার জন্য তাকে 1924 সালের 5 ফেব্রুয়ারি মুক্তি দেওয়া হল ।
1925, 26,27 সালে গান্ধীজী কংগ্রেসের অধিবেশনে উপস্থিত থাকলেও তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন নি । সুভাষচন্দ্র ও জহরলাল নেহরু পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি তুলে একটি প্রস্তাব আনতে চান । তিনি চেয়েছিলেন আপোষ আলোচনার মাধ্যমে স্বায়ত্ব শাসন । তখন নিয়ম ছিল ভারতবাসী লবণ তৈরি করতে পারবে না । এমনকি যারা সমুদ্রের ধারে থাকে তারাও প্রস্তুত করতে পারবেনা । সকলকেই ব্রিটিশ সরকারের লবণ কিনতে হবে । অল্প দিনের মধ্যেই সমগ্র ভারত জুড়ে শুরু হলো লবণ আইন অমান্য আন্দোলন । গ্রাম-শহরে মানুষ লবণ তৈরি করতে আরম্ভ করল । হাজার হাজার মানুষকে বন্দি করা হলো । দেশের সাধারণ মানুষের উপর শুরু হলো অকথ্য অত্যাচার । সেইসময় কমবেশি প্রায় 1 লক্ষ সত্যাগ্রহী কারারুদ্ধ হল ।বাধ্য হয়ে লর্ড ডারউইন গান্ধীর সাথে বৈঠকে বসলেন এবং তাদের মধ্যে চুক্তি হলো, সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ লবণ তৈরি করতে পারবে এবং বিক্রি করতে পারবে । দেশের সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য গান্ধীকে আমন্ত্রণ জানানো হলো । 1930 সালের 15 আগস্ট তিনি যাত্রা করলেন ইংল্যান্ডের পথে । সেখানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্রাট পঞ্চম জর্জ এবং সম্রাজ্ঞীর সাথে আলোচনা করলেন । পরনে অর্ধনগ্ন ফকিরের মতন পোশাক । সেই সময় ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিরা গান্ধীর সাথে সাক্ষাৎ করতে আসতেন । এদের মধ্যে ছিলেন জর্জ বার্নার্ড শ, চার্লি চ্যাপলিন ইত্যাদি । সমস্ত আলাপ আলোচনা ব্যর্থ হলো ।
1925, 26,27 সালে গান্ধীজী কংগ্রেসের অধিবেশনে উপস্থিত থাকলেও তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন নি । সুভাষচন্দ্র ও জহরলাল নেহরু পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি তুলে একটি প্রস্তাব আনতে চান । তিনি চেয়েছিলেন আপোষ আলোচনার মাধ্যমে স্বায়ত্ব শাসন । তখন নিয়ম ছিল ভারতবাসী লবণ তৈরি করতে পারবে না । এমনকি যারা সমুদ্রের ধারে থাকে তারাও প্রস্তুত করতে পারবেনা । সকলকেই ব্রিটিশ সরকারের লবণ কিনতে হবে । অল্প দিনের মধ্যেই সমগ্র ভারত জুড়ে শুরু হলো লবণ আইন অমান্য আন্দোলন । গ্রাম-শহরে মানুষ লবণ তৈরি করতে আরম্ভ করল । হাজার হাজার মানুষকে বন্দি করা হলো । দেশের সাধারণ মানুষের উপর শুরু হলো অকথ্য অত্যাচার । সেইসময় কমবেশি প্রায় 1 লক্ষ সত্যাগ্রহী কারারুদ্ধ হল ।বাধ্য হয়ে লর্ড ডারউইন গান্ধীর সাথে বৈঠকে বসলেন এবং তাদের মধ্যে চুক্তি হলো, সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ লবণ তৈরি করতে পারবে এবং বিক্রি করতে পারবে । দেশের সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য গান্ধীকে আমন্ত্রণ জানানো হলো । 1930 সালের 15 আগস্ট তিনি যাত্রা করলেন ইংল্যান্ডের পথে । সেখানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্রাট পঞ্চম জর্জ এবং সম্রাজ্ঞীর সাথে আলোচনা করলেন । পরনে অর্ধনগ্ন ফকিরের মতন পোশাক । সেই সময় ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিরা গান্ধীর সাথে সাক্ষাৎ করতে আসতেন । এদের মধ্যে ছিলেন জর্জ বার্নার্ড শ, চার্লি চ্যাপলিন ইত্যাদি । সমস্ত আলাপ আলোচনা ব্যর্থ হলো ।
গান্ধী যখন দেশে ফিরলেন দেশজুড়ে তখন চলছে নির্যাতন-নিপীড়ন । নেতৃস্থানীয় সকলেই বন্দী । বন্দী করা হলো গান্ধী কেউ । বুঝতে পেরেছিলেন কংগ্রেসের অধিকাংশ সদস্য তাকে শ্রদ্ধা করলেও তার নীতি আদর্শ মেনে চলে না । সত্যাগ্রহের আদর্শ অনুসরণ করে চলে না । তাই তিনি কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করলেন । 1946 সালে গান্ধীজী শান্তিনিকেতন এলেন । কবিগুরুর সাথে ছিল তার মধুর আন্তরিক সম্পর্ক । শান্তিনিকেতনের কাজে গান্ধীর নানাভাবে রবীন্দ্রনাথকে সাহায্য করেছেন । এই বছরে রামগড়ে নতুন কংগ্রেস অধিবেশন বসল । মাওলানা আবুল কালাম আজাদ সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হলেন । অধিবেশনে ঘোষণা করা হলো একমাত্র পূর্ণ স্বাধীনতাই ভারতের কাম্য । গান্ধীকে পুনরায় দলের নেতা নির্বাচিত করা হল । শুরু হলো সত্যাগ্রহ আন্দোলন । 1942 সালে 9 আগস্ট বোম্বায়েতে নিখিল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতির সভায় 'ভারতছাড়ো' প্রস্তাব গৃহীত হলো । কংগ্রেসের সমস্ত নেতাকে গ্রেফতার করা হল । গান্ধী,সরোজিনী নাইডু,মহাদেব দেশাই মিরাবেন কে বন্দি করে আগা খাঁ প্রসাদে রাখা হলো । সারা ভারত উত্তাল হয়ে উঠল । শুরু হলো গণবিক্ষোভ । পুলিশের হাতে প্রায় 1000 লোক মারা পড়ল । গান্ধীর শরীরের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে । ইংরেজ সরকার অনুভব করতে পারল কারাগারে গান্ধীর কোন ক্ষতি হলে সমস্ত বিশ্বের কাছে তাদের কৈফত দিতে হবে । তাই বিনাশর্তে গান্ধীকে মুক্তি দেয়া হলো ।
1945 সালে বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে ইংল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে শ্রমিকদল জয়ী হলো । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইংল্যান্ড কে এত বিপর্যস্ত করে দিয়েছিল যে তারা উপলব্ধি করতে পারছিল ভারতের স্বাধীনতার দাবিকে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয় । এদিকে দেশের মধ্যে হিন্দু মুসলমানের বিভেদ প্রবল আকার ধারণ করতে থাকে । শুরু হলো ভয়াবহ দাঙ্গা । পারস্পরিক এই দাঙ্গা বিভেদে গান্ধী গভীর দুঃখিত হয়েছিলেন । তিনি চেয়েছিলেন হিন্দু মুসলমানের ঐক্য, পরস্পরের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ নয় । কিন্তু তিনি বেদনাহত হলেন । দেশ বিভাগের মধ্য দিয়ে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করল ।
দিল্লিতেও তখন নানান সমস্যা । এদিকে দাঙ্গাপীড়িত মানুষ, মন্ত্রিসভায় মতানৈক্য, খাদ্য বস্ত্রের সমস্যা । দিল্লিতে মুসলমানদের নিরাপত্তার জন্য তিনি অনশন করলেন এবং এই তার শেষ অনশন । সম্মিলিত সকলের অনুরোধে 18 জানুয়ারি অনশন ভঙ্গ করলেন । এই সময় গান্ধী নিয়মিত প্রার্থনা সভায় যোগ দিতেন । 30 শে জানুয়ারি তিনি প্রার্থনা সভায় যোগ দিতে চলেছেন এমন সময় ভিড় ঠেলে তার সামনে এগিয়ে এলো এক যুবক । সকলের মনে হলো সে বোধহয় গান্ধীকে প্রণাম করবে । কিন্তু কাছে এসে সামনে ঝুঁকে পড়ে পরপর তিনবার পিস্তলের গুলি চালাল । দুটি পেতে ও একটি বুকে বিধলো । সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন । তার মুখ থেকে শুধু দুটি শব্দ বের হলো "হে রাম" । তার পরেই সব নিস্তব্ধ হয়ে গেল । সমস্ত দেশ শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়লো, পরদিন যমুনার তীরে চিতার আগুনে তার প্রার্থীব দেহ বশ্মিভূত হয়ে গেল । দেশ-বিদেশ থেকে মানুষেরা শ্রদ্ধাঞ্জলি পাঠালেন । তাদের মধ্যে ছিলেন দেশবরেণ্য মানুষেরা । তাদের সকলের কাছে গান্ধী বিপন্ন মানব সভ্যতার সামনের একমাত্র আশার আলো ।
ReplyDeleteشركة مكافحة حشرات بالقصيم
Watch the free cricket highlights videos, cricket match articles & cricket match highlights with HD quality online for free only on crickethighlightsz.com
ReplyDeletehtml generator tool
ReplyDeletehtml generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
ReplyDeletehtml generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool
html generator tool